• সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

বেলকুচির দৌলতপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ পদ দখলে অনিয়মের অভিযোগ

  • ''
  • প্রকাশিত ৩০ জানুয়ারি ২০২৪

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ পদ দখলে নিয়ম আর অনিয়মের মাঝে চলছে দ্বন্দ্ব।  কলেজের দুটি কক্ষ থেকে দু’জন সাবেক অধ্যক্ষ আর বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অফিস কক্ষ থেকে পরিচালিত হচ্ছে কলেজ।  একে অপরের পক্ষে-বিপক্ষে তুলে ধরছে যৌক্তিক অভিযোগ।  কলেজের গভর্নিং বডি গঠন নিয়েও অনিয়মের বিষদ কারচুপি এছাড়াও রয়েছে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে কমিটি গঠনের অভিযোগ ।

এ বিষয়ে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদ রানা না না দুর্নীতির অভিযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে অধ্যক্ষ পদ হতে গত ৩১মে ২০২৩ অব্যাহতি দিয়েছেন।  অব্যাহতি পাওয়ার পরও তিনি এখনো কলেজের অফিস কক্ষ দখল করে আছেন স্থানীয় কিছু ব্যক্তিদের সহায়তায়।  এছাড়া কলেজের সাবেক গভর্নিং বোর্ডির একাংশকে নিয়ে চলছে তার ব্যক্তিগত কার্যক্রম।  এতে করে কলেজে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা যা কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকার সচেতন মহলের কাম্য নয়। বিষয়টি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে কলেজের শৃঙ্খল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদ রানা জানান, আমি দায়িত্বে থাকাকালীন কোনপ্রকার দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়নি।  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে অধ্যক্ষ পদ হতে অব্যাহতি দিয়েছে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি। আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার প্রক্রিয়ায় আমার পদ ফিরে পাব বলে আশাবাদী তিনি ।

অপরদিকে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কে এম খালেকুজ্জামান জানান, কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদ রানা নিয়মবহির্ভূত ভাবে অধ্যক্ষ পদে ছিলেন।  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার না না অনিয়মের কারণে তাকে অধ্যক্ষ পদ হতে অব্যাহতি দিয়েছেন।  অব্যাহতি পাওয়ার পরও সে জোর করে অফিস কক্ষ দখল করে আছে এবং অদ্যবধি পর্যন্ত কলেজের সকল ডকুমেন্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বুঝিয়ে দিচ্ছে না ।  এত করে বিগ্ন ঘটছে কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম।  এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

এ বিষয়ে দৌলতপুর ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস জানান, আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে যে অভিযোগ করা হয়েছে কলেজ গভর্নিং বোডির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে সভাপতি পদ পাওয়ার তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম নীতি মেনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বর্তমান গভর্নিং বডি গঠন করা হয়েছে এবং তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে।  সেহেতু কে কি অভিযোগ করল তা আমার দেখার বিষয় নয়।  সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো সুষ্ঠু সমাধান দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খালেকুজ্জামানকে কলেজের কার্যক্রম পরিচালনা করার দায়িত্ব ভার দিয়েছে।  সে যথাযথ দায়িত্বভার গ্রহণ করে তার সকল কার্যক্রম করছে।

কিন্তু দুঃখজনক বিষয় কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদ রানা অফিস কক্ষ দখল করে আছে এবং তার ব্যক্তিগত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।  অফিস কক্ষ দখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

এ বিষয়ে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ সামসুল আলম জানান কলেজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত যে পরিশ্রম করে কলেজ আজ এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি এসব বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।  তিনি আরো জানান কলেজের নানা অভিযোগের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এসময় স্থানীয় সমাজসেবক আলহাজ্ব মোঃ ফারুক জানান সভাপতি পদ আর অধ্যক্ষের পদ নিয়ে সৃষ্ট ঘটনার কারণে কলেজের ক্ষতি হোক আমরা তা চাই না।  আমাদের ছেলেমেয়েরা কলেজের শিক্ষার পরিবেশ পাবে ভালোভাবে পড়াশোনা করবে এটাই প্রত্যাশা।  বিশৃঙ্খলা করে অবৈধভাবে পদ দখলের ইতিহাস রচনা পড়তে বা শুনতে চাই না।  সঠিক নিয়মে স্ব স্ব পদে থেকে যার যার দায়িত্ব পালন করবে এটাই আশা করি আমরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads